নবীগঞ্জ প্রতিনিধি ॥ বর্তমানে দেশে চিনির চেয়ে গুড়ের দাম বেশী হওয়ার কারনে নবীগঞ্জের সর্বত্র এখন আখের গুড় এবং মরিচার গুড়ে সাথে চিনি মিশিয়ে এক শ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ীরা তা অবাধে বিক্রি করছে। যার ফলে সাধারন ক্রেতাগন খাঁটি গুড়ের বদলে নকল ভেজাল চিনি ও পাউডার মেশানো গুড় ক্রয় করে প্রতিনিয়ত ঠকা খাচ্ছেন।  বর্তমান সময়ে শীত মৌসুমে  গুড়ের চাহিদা বেশী হওয়ার কারনে পর্যাপ্ত পরিমান খেজুরের রস না থাকায় এবং মরিচা গুড়ে অধিক মুনাফা লাভের আশায় ঐ ব্যবসায়ীরা গুড়ে চিনি ও পাউডার মিশিয়ে তা বাজারে বিক্রি করছেন। বাজারে সব সময় শীতে মরিচা গুড়ের চাহিদা বেশি থাকার কারনে অধিক মুনাফা লাভের আশায় অসাধু বব্যসায়ীরা এ অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছেন। ভেজাল মরিচা গুড় খালি মাটির কলসিতে ভরে বাজারে অবাধে বিক্রি করছে। অনেক ক্রেতারাই খায়েশ করে মরিচা গুড় এবং আখের গুড় কিনে বিভিন্ন রকম পিঠা-পায়েস, চা ও অন্যান্য সুস্বাধু খাবার তৈরী করে থাকেন। তাই এ সময়ে পর্যাপ্ত পরিমান খেজুরের রসের অভাবে সর্বত্র খেজুরের গুড় ও মরিচা গুড়ের চাহিদা থাকায় দেশের রংপুর, ফরিদপুর, চাপাঁই নবাবনগঞ্জ, নাটোর, যশোর অঞ্চলের গুড় উৎপাদনকারীরা চাহিদারিক্তভাবে চিনি মেশানো ভেজাল গুড়  তৈরী করে বাজারে বিক্রি করে আসছেন।
তাদের এ ফমুর্লাকে কাজে লাগিয়ে নবীগীঞ্জের মধ্য বাজারের দু’ব্যবসায়ী বিভিন্ন স্থান থেকে মরিচা গুড়ের খালি হাড়ি আমদানী করে দোকানের পাশেই নিজেদের তৈরী চিটাগুড় ও সুগন্ধি পাউডার দিয়ে ভেজাল মরিচা গুড় তৈরী করে আমদানীকৃত খালি কলসিতে ভরে উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে এখন দেদারছে বিক্রি করছেন।  নবীগঞ্জের মধ্য বাজারে এক ব্যবসায়ীর দোকানের পিছনে বাসায় নকল গুড় তৈরীর কারখানায় প্রতিদিনই এখন তৈরী হচ্ছে বিপুল পরিমান গুড়।
জানা যায়, বর্তমান বাজারে খেজুরের গুড় প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০/১০০ টাকা, মরিচার গুড় প্রতিকেজি ৮০/৯০ টাকা এবং সাধারন আখের গুড় প্রতিকেজি ৫৫/৬০ টাকা দরে। অন্যদিকে চিনি বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৪৫/৫০ টাকা দরে। তাই চিনি মিশিয়ে মরিচা গুড় তৈরী করে অধিক মুনাফা অর্জন করা যায় বলেই ব্যবসায়ীরা এই প্রতারানা আশ্রয় নিয়েছেন বলে সাধারন ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন। এভাবে সুস্বাদু খাবার তৈরীর প্রধান উপাদান মরিচা গুড়ের সাথে চিনি মিশিয়ে বাজারে বিক্রির কারনে সাধারন ক্রেতারা প্রতিদিন ঠকা খেয়ে আসছেন। প্রতিদিন শত শত কেজি ভেজাল মরিচা গুড় নবীগঞ্জের বিভিন্ন বাজারে বিক্রি হলে প্রশাসন নিরব রয়েছেন। স্যানেটারী পরিদর্শকের চোখের সামনেই প্রতিদিন ঘটছে এ ঘটনা। কিন্তু সঙ্গত কারনে কোন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। তাই এ ব্যাপারে কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি কামনা করছেন প্রতারনার শিকার সাধারন ক্রেতারা।