বাহুবল প্রতিনিধি ॥ বাহুবলের আলিফ-সোবহান চৌধুরী ডিগ্রী কলেজ প্রাঙ্গনে ১৪৪ ধারা জারি করেছে স্থানীয় প্রশাসন। এতে বন্ধ হয়ে গেছে কলেজের একাডেমিক কার্যক্রম। মঙ্গলবার কলেজ মাঠে দু’পক্ষের পাল্টা-পাল্টি সমাবেশ আহ্বানকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা সৃষ্টির প্রেক্ষিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ আবদুল ওয়াদুদ ১৪৪ ধারা জারি করেন। এ অবস্থায় বিবদমান গ্র“প মিরপুর বাজারে পৃথক স্থানে সমাবেশ করে। সমাবেশে বক্তৃতার জের ধরে দু’পক্ষে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, মিরপুর আলিফ-সোবহান চৌধুরী ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ ফারুক উদ্দিন চৌধুরীকে ২০০৭ সালের ৯ ফেব্র“য়ারি সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এ বরখাস্তাদেশের বিরুদ্ধে ফারুক উদ্দিন চৌধুরী আদালতে মামলা দায়ের করেন। এ অবস্থায় পরপর তিন জন সহকারী অধ্যাপককে কলেজে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব দিয়েও শৃংখলা রক্ষা করা যাচ্ছিল না। ফলে গত ২০ অক্টোবর স্থানীয় সংসদ সদস্য আলহাজ্ব শেখ সুজাত মিয়ার নেতৃত্বাধিন কলেজ গভর্ণিং বডি’র এক সভায় ফারুক উদ্দিন চৌধুরীকে স্বপদে বহাল করা হয়। এতে বেঁকে বসেন কলেজের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ফজলুর রহমান চৌধুরীসহ গভর্ণিং বডি’র একাংশ। তারা ফারুক উদ্দিন চৌধুরীকে অধ্যক্ষ পদে পূনর্বহালের প্রতিবাদে মঙ্গলবার সকাল ১০টায় কলেজ মাঠে প্রতিবাদ সমাবেশ আহ্বান করে। এ প্রেক্ষিতে স্থানীয় সংসদ সদস্য আলহাজ্ব শেখ সুজাত মিয়া সমর্থিত গভর্ণিং বডি’র অপর গ্র“প একই দিন ও সময়ে কলেজ মাঠে পাল্টা সমাবেশ আহ্বান করে। এতে উত্তেজনা ও সংঘর্ষের আশংখা সৃষ্টি হলে উপজেলা প্রশাসন গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত কলেজ মাঠে ১৪৪ ধারা জারি করে। এ অবস্থায় বিবদমান গ্র“প মিরপুর বাজারের পৃথক স্থানে সমাবেশ করে।
মঙ্গলবার দুপুরে শেখ সুজাত মিয়া এমপি সমর্থিত গ্র“প মিরপুর বাজারের উত্তরপ্রান্তে থানা বিএনপি সভাপতি ও কলেজের গভর্ণিং বডির সদস্য আকাদ্দছ মিয়া বাবুলের নেতৃত্বে সমাবেশ করে। এ সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন কলেজ গভর্ণিং বডি’র সভাপতি আলহাজ্ব শেখ সুজাত মিয়া এমপি। অন্যান্যের মাঝে উপস্থিত ছিলেন লামাতাসী ইউপি চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান চৌধুরী টেনু, কলেজ গভর্ণিং বডি’র সদস্য প্রভাষক আইয়ূব আলী, সদস্য প্রভাষক আব্দুল হাই ভূঁইয়া ও সদস্য ইমাম উদ্দিন সরকার, মিরপুর চৌমুহনী ব্যবসায়ী কমিটির সভাপতি মুতাব্বির হোসেন, থানা যুবদল সভাপতি আলহাজ্ব শামছুল আলম, মোঃ আব্দুল্লাহ, চারগ্রাম নেতা তাজুল ইসলাম চৌধুরী, মাওলানা কুতুব উদ্দিন, বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন ফজল, আব্দুস সাত্ত্ার, আইয়ুব আলী খান, আব্দুল হান্নান নানু, জয়নাল আবেদীন, নাছিমুদ্দিন, থানা ছাত্রদলের আহ্বায়ক আব্দুল আহাদ কাজল, সাবেক সভাপতি এনামুল হক এনাম, মোঃ শাহিন মিয়া, সাবেক ছাত্র নেতা ফারুক মিয়া, সানাউল হক চৌধুরী সানি, ইফতেখার আহমেদ রুহেল এবং শাহ আবিদ মিয়া প্রমুখ।
অপর গ্র“প মিরপুর চৌমুহনীতে আওয়ামীলীগ নেতা ইব্রাহিম মুন্সীর সভাপতিত্বে সমাবেশ করে। এ উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আলমগীর চৌধুরী, মিরপুর ইউপি চেয়ারম্যান ও কলেজ গভর্ণিং বডি’র সদস্য আব্দুল আওয়াল, সদস্য ডা. আব্দুল মতিন, সদস্য জয়নাল আবেদীন, সদস্য রফিকুল ইসলাম দুলু, সদস্য ফজলুর রহমান চৌধুরী, সদস্য এডভোকেট আব্দুল মতিন খান, সদস্য ফাতেমা ইয়াছমিন ও সদস্য ইদ্রিছ আলী, থানা আওয়ামীলীগ নেতা এডভোকেট জসিম উদ্দিন, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা আবুল হাসিম, জাহেদুল ইসলাম জিতু, আসকার আলী, আমিনুল ইসলাম ফারুক, এমএ জব্বার ফুল মিয়া, হাবিবুর রহমান মাস্টার এবং ছেরাগ আলী মুন্সী প্রমুখ।
এদিকে, সমাবেশে চৌমুহনী ব্যবসায়ী কমিটির সভাপতি মোতাব্বির হোসেনে বক্তৃতাকে কেন্দ্র করে চারগাঁও গ্রামের জাহিদুল হক জিতু’র লোকজন বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে পড়ে। একই গ্রামের অপর অংশের লোকজন এর প্রতিবাদ করলে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে স্থানীয় চারগাঁও গ্রামের দু’পক্ষে উত্তেজনা বিরাজ করছে। সংঘর্ষের আশঙ্কায় গ্রামটিতে তাৎক্ষণিক পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
ওপর দিকে, গতকাল মঙ্গলবার রাতে মাইকযোগে আলিফ-সোবহান চৌধুরী ডিগ্রী কলেজ কর্তৃপক্ষের নামে ২৯ অক্টোবর পর্যন্ত কলেজ বন্ধের ঘোষণা প্রচার করা হয়।