নবীগঞ্জ প্রতিনিধি ॥ নবীগঞ্জে এক তরুনী প্রেমের দাবী নিয়ে গভীর রাতে মাদ্রাসা ছাত্র তরুনের বাড়িতে হাজির। এ ঘটনার পরদিন ওই তরুন সাহাজ উদ্দিন মিলন (২০) এর রহস্যজনক মৃত্যু নিয়ে এলাকায় চলছে আলোচনা। পরিবারে চলছে শোকের মাতম। ঘটনাটি ঘটেছে গত ২৩ ডিসেম্বর দিন গত গভীর রাত ৩ টার দিকে নবীগঞ্জ উপজেলার কালিয়ারভাঙ্গা ইউনিয়নের চানপুর গ্রামে মৃত মনির মিয়ার বাড়িতে। এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, গত ২৩ ডিসেম্বর রাতে খাওয়া দাওয়া শেষে সাহাজ উদ্দিন মিলন সহ বাড়ির সবাই ঘুমিয়ে পড়ে। রাত প্রায় ৩ টার দিকে একই গ্রামের জনৈক তরুনী প্রেমের দাবী নিয়ে মিলনের ঘরের দরজায় এসে ডাকাডাকি শুরু করে। গভীর রাতে তরুনীর অবস্থানে হতবম্ব হয়ে পরে মিলন ও তার পরিবারের লোকজন। এ সময় শিক্ষার্থী সাহাজ উদ্দিন মিলন তার রুমেই ঘুমে ছিল। তরুনীর ডাকাডাকি শুনে পরিবারের লোকজন দরজা খুললে ওই তরুনী দাবী করে সাহাজ উদ্দিন মিলনের সাথে তার প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে। ঘুম থেকে উঠে মিলন প্রেমের প্রস্তাবের কথা অস্বীকার করে কান্নাকাটি করতে থাকে।
পরদিন ২৪ ডিসেম্বর বিকেলে সাহাজ উদ্দিন মিলনকে ঘরের একটি রুম থেকে অজ্ঞান অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। পরিবারের লোকজন তাকে নবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। ওইদিন রাতেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় সাহাজ উদ্দিন মিলনের মৃত্যু হয়।
সাহাজ উদ্দিন মিলনের চাচাতো ভাই শাহবুব আলম (সাবু মিয়া) বলেন, সাহাজ উদ্দিন মিলনকে জিজ্ঞেস করলে সে জানায় আমি মাদ্রাসায় লেখাপড়া করছি, এরকম কোনো কাজ আমার ধারা সম্ভব নয়। বিদেশ যাওয়ার জন্য ২৬ ডিসেম্বর হবিগঞ্জ পাসপোর্ট অফিসে ফিঙ্গার দেয়ার কথা ছিল মিলনের। মৃত্যুর আগে শেষ কথা হয় তার চাচাতো ভাই হিফজুর রহমানের সাথে। মিলন বলেন, ভাই আমার মানসম্মান সব শেষ হয়ে গেছে, বেঁচে থাকা আর মরা এক সমান। গলা আর বুকে প্রচন্ড জ্বালাপোড়া হচ্ছে। সাহাজ উদ্দিন মিলনের পরিবার অভিযোগ এলাকায় তাদের সুনাম ক্ষুন্ন করতে কথিত প্রেমিকার আবির্ভাব হয়। এটি তাদের পরিবারের বিরুদ্ধে গ্রাম্য রাজনীতির ষড়যন্ত্র। সুষ্ঠু একটি তদন্তের মাধ্যমে সাহাজ উদ্দিন মিলনের বিষয়টি বিচারের আওতায় নিয়ে আসতে চায় পরিবার। এদিকে নবীগঞ্জ থানার এসআই কাজল তরুনীকে মিলনের বাড়ি থেকে উদ্ধার করে তার পিতার কাছে পৌঁছে দেয়। মিলনের ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ তার পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হয়। পরে তার নিজ বাড়ীতে দাফন করা হয়েছে।