প্রেস বিজ্ঞপ্তি ॥ ফেইসবুকে আল্লাহর নাম ও শায়খে দিগলবাগির ছবি অবমাননার প্রতিবাদের মাআরিফুল কুরআন মাদ্রাসায় এক জরুরী মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। গতকাল সোমবার সকালে ইসলামী সংগ্রাম পরিষদ হবিগঞ্জ এর সভাপতি আল্লামা নুরুল ইসলাম ওলিপুরী’র সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক জামেয়া সা’দিয়া রায়ধর এর মুহতামিম আল্লামা আবু সালেহ সাদী’র পরিচালনায় সভায় ৮টি উপজেলার নির্বাচিত ও উল্লেখযোগ্য প্রতিনিধি আলেম, সামাজিক ও সর্বদলীয় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বগণ এবং পার্শ্ববর্তী বি-বাড়িয়া জেলার শায়খে দিগলবাগির ভক্ত-মুরিদানের প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন। সভায় গত ২০ আগস্ট হবিগঞ্জ সদরস্থ নারায়ণপুরের বাসিন্দা আলমগীর ফেইসবুকে আল্লাহর মহাপবিত্র নাম ও শায়খ আব্দুর রহমান দিঘলবাগির ছবির নিচে কমেন্ট অপশনে চরম আপত্তিকর ও অশ্লীল ভিডিও আপলোড করার বিষয়টি বিস্তারিত তুলে ধরে দলমত নির্বিশেষে সকল মুসলমানদের এ ব্যাপারে করণীয় নির্ধারণে মতামত চাওয়া হয়। উপস্থিত প্রতিনিধি উলামায়ে কেরাম ও গণ্যমান্য সামাজিক ব্যক্তিগণ উক্ত ঘটনার তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করে এ ব্যাপারে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণে প্রশাসনের নিকট জোর দাবী জানানো হয়। অন্যথায় আল্লাহর নামের ইজ্জত রক্ষার জন্য দাবী আদায়ে কঠোর কর্মসূচী গ্রহণ করা হবে।
সভাপতির বক্তৃতায় আল্লামা নুরুল ইসলাম ওলিপুরী বলেন, যে আল্লাহ আমাদের কে সৃষ্টি করলেন, সে আল্লাহ কে এমন ন্যাক্কারজনকভাবে অপমান করার পর এর বিচার না হওয়া পর্যন্ত দলমত নির্বিশেষে কোন মুসলমান ঘরে বসে থাকতে পারেনা। আল্লামা আব্দুর রহমান শায়খে দিঘলবাগী (রহ:) দলমত নির্বিশেষে সকল পর্যায়ের মানুষের কাছে একজন পরম শ্রদ্ধাভাজন ব্যক্তিত্ব ছিলেন। সারাদেশে তাঁর রয়েছে লক্ষ লক্ষ ভক্ত মুরিদান। তিনি বলেন, উক্ত ঘটনায় যারা আসামী হয়েছে- তারা সবাই সরকারের কালো তালিকাভূক্ত সন্ত্রাসী সংগঠন হিজবুত তাওহীদের নেতা কর্মী। এই সংগঠনটির ঈমান-ইসলাম ও দেশ বিরোধী সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে লিপ্ত থাকার প্রমাণ আমাদের হাতে রয়েছে। এর ফলে সমাজের শান্তি শৃংখলা বিনষ্ট হওয়ার সমূহ আশংকা রয়েছে। আলোচিত ঘটনার ২নং আসামী মো: জাহাঙ্গীর বিভিন্ন সময় অনলাইনে ও অফলাইনে দেশের সম্মানিত উলামায়ে কেরাম ও পীর মাশায়েখদের কে নিয়ে চরম অশালীন ব্যঙ্গ বিদ্রুপাত্মক কার্টুন প্রকাশ ও মানহানিকর মন্তব্য ও লেখালেখি অবলীলায় করে যাচ্ছে। আমাদের প্রবল ধারণা আলোচিত ঘটনাটির সাথে এই সন্ত্রাসী সংগঠনটির পরিকল্পিত যোগসাযশ রয়েছে। সভা থেকে হিজবুত নেতা আলমগীর ও তার ভাই জাহাঙ্গীর এবং তাদের মদদ দাতাদেরকে অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানাচ্ছি। পাশাপাশি সরকারের কালো তালিকাভূক্ত জঙ্গী সংগঠন হিজবুত তাওহীদের সকল কার্যক্রম হবিগঞ্জে নিষিদ্ধ ঘোষণা করার আহবান জানাচ্ছি। অন্যথায় সমাজের শান্তি শৃংখলা ও ধর্মীয় সম্প্রীতি অব্যাহত রাখতে ২৫ আগস্ট মঙ্গলবার হবিগঞ্জের ৯টি উপজেলায় বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ এবং ২৬ আগষ্ট বুধবার হবিগঞ্জ কোর্ট চত্ত্বরে স্মরণকালের সবচেয়ে বৃহৎ বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশের ঘোষণা করছি।
সভার শেষ প্রান্তে ব্যকস সভাপতি সামছুল হুদার মাধ্যমে পুলিশ সুপার হবিগঞ্জ মোহাম্মদ উল্লাহ আন্দোলনকারী নেতৃবৃন্দের সাথে যোগাযোগ করে তাঁর কার্যালয়ে এক সংক্ষিপ্ত মিটিং অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় পুলিশ সুপার হবিগঞ্জ সদর থানায় দায়েরকৃত মামলা রুজু করার জন্য সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ প্রদান করেন এবং আসামীদেরকে অনতিবিলম্বে গ্রেপ্তারের আশ্বাস দিলে ২৫ ও ২৬ আগষ্ট দুই দিনের জন্য যাবতীয় বিক্ষোভ কর্মসূচী সাময়িক মুলতবী ঘোষণা করেন।
পরামর্শ সভায় উপস্থিত ছিলেন- মাওলানা আব্দুল বাসিত আজাদ বড় হুজুর, বানিয়াচং, মাওঃ সিরাজুল ইসলাম মিরপুরী, মাওলানা আজিজুর রহমান মানিক, মাও: লুকমান সাদী, হাফেজ আব্দুন নূর বাহুবলী, মাও: আবুল কালাম, হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মশিউর রহমান শামীম, ৫নং গোপায়া ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান আক্তার হোসেন, সৈয়দ মিয়া, আওয়ামীলীগ নেতা নুরুজ্জামান চৌধুরী, জেদ্দা যুবলীগ সেক্রেটারী জাকারিয়া চৌধুরী, সদর স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি মো: শেখ সেবুল, যুবদল নেতা মো: জহিরুল ইসলাম সেলিম, লাখাই উলামা পরিষদের সভাপতি মাও: তাজুল ইসলাম, মাও: আব্দুল হালিম, মুফতী লুৎফুর রহমান চুনারুঘাট, যুব উলামা ঐক্য পরিষদ হবিগঞ্জ এর সভাপতি মাও: জাবের আল হুদা চৌধুরী, সেক্রেটারী মাও: নিয়াজুর রহমান নিজাম, সাংগঠনিক সম্পাদক মাও: সাইদুর রহমান, লাখাই যুব উলামার আহবায়ক মাও: আলী আজম, সদর যুব উলামার সভাপতি মাও: হোসাইন আহমদ খান ত্বহা, সেক্রেটারী মাও: আরিফ রব্বানী খান, বানিয়াচং প্রতিনিধি মাও: রিয়াদ আল আসাদ, বি বাড়িয়া জেলার শায়খে দিঘলবাগির ভক্ত মুরিদানদের প্রতিনিধি হাজী আজমান উল্লাহ, আব্দুল বছির, মিলন মিয়া প্রমুখ।